হঠাৎ করে ফেসবুক সার্ভার ডাউন

ছবি
  Facebook  আজ, ৫ই মার্চ, ২০২৪, রাত 9:00 নাগাদ হঠাৎ করে ফেসবুক সার্ভার ডাউন হওয়ার কারণ এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। কিছু সম্ভাব্য কারণ: ডেটা সেন্টারে ত্রুটি: ফেসবুকের ডেটা সেন্টারে কোন ত্রুটির কারণে সার্ভার ডাউন হয়ে থাকতে পারে। সাইবার হামলা: ফেসবুক সার্ভারে কোন সাইবার হামলার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। নতুন আপডেটে ত্রুটি: সম্প্রতি ফেসবুকে কোন নতুন আপডেট দেওয়া হয়ে থাকলে, সেই আপডেটে ত্রুটির কারণেও সার্ভার ডাউন হতে পারে। অন্যান্য কারণ: বর্তমান পরিস্থিতি: বর্তমানে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছে। সার্ভার কখন সম্পূর্ণভাবে ঠিক হবে তা এখনো জানা যায়নি। কিছু ব্যবহারকারী ইতিমধ্যেই ফেসবুকে প্রবেশ করতে পারছেন, তবে অনেকে এখনো সমস্যার সম্মুখীন।

মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে, মন কেন প্রভাবিত হয়।

 

Human-Brain-Memories-Neurons
Brain rule

মানুষ যে মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, তার ক্ষমতা অপরিসীম। এই মস্তিষ্কের দ্বারাই আজকের পৃথিবী এতটা উন্নত। তাই যারা মস্তিষ্কের শক্তিকে অনুভব করেছে, তারা নিজের জীবনের উন্নতির মাধ্যমে অন্য মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন করতে পেরেছে। কিন্তু সবার কাছে মস্তিষ্ক থাকলেও সবাই নিজের মস্তিষ্ক সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেনা। এর কারণ হলো মস্তিষ্ক মনের দ্বারা প্রভাবিত হয়, আর মনকে নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন। মানুষের জীবনে ভালো-মন্দ বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, ফলে মনে সুখ-দুঃখ উৎপন্ন হয়। তখন আমাদের মস্তিষ্ক এই অনুভূতিগুলো গ্রহণ করে, আমাদের সমস্ত শরীরকেই ঠিক সেই ভাবে পরিচালনা করে, তাই মানুষ যখন আনন্দে থাকে এবং তখন অনেক পরিশ্রম করলেও শরীর সব পরিশ্রম মানিয়ে নিতে পারে, কিন্তু যখন দুঃখী থাকে, তখন শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, কাজ করবার কোন এনার্জি শরীরে থাকে না, এবং তখন যে কাজ করা হয় তাতে মন লাগে না, তাই কাজ ততটা ভালোও হয় না, এবং অল্প পরিশ্রমেও শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কোন মানুষ দীর্ঘদিন দুঃখী থাকলে সে হতাশা বিষন্নতা মানসিক অবসাদের মতো কষ্ট ভোগ করে, এবং শারীরিক রোগ প্রতিরোধ করবার ক্ষমতা কমে যায়, ধীরে ধীরে বিভিন্ন শারীরিক রোগ ভোগ করে, আর আনন্দ মানুষের রোগ প্রতিরোধ করবার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সুতরাং মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হলে মন ভালো রাখতে হবে বা মনে ফুর্তি রাখতে হবে। এখন প্রশ্ন হল যে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও মন কিভাবে ভাল রাখা যাবে? 

সত্যি কথা হলো খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে মন ভালো রাখা যায় না, পরিস্থিতি খারাপ হলে মন খারাপ হবেই, আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মন খারাপ করে বসে থাকলে তো আর পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে না, পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হলে মস্তিষ্কের শক্তিকেই কাজে লাগাতে হবে। আমাদের মস্তিষ্ক যেমন মনের দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং আমাদের সেই ভাবেই পরিচালিত করে, কিন্তু মস্তিষ্কের সব থেকে বড় গুণ হলো, মস্তিষ্ককে যেই কাজই দেওয়া হোক না কেন সেই কাজ শুরু করে দেয়, যেমন ধরুন আপনি কোন খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন এবং আপনার মস্তিষ্ককে কাজ দিলেন এই পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বেরোনো যায় বা কিভাবে এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করা যাবে, মস্তিষ্ক তার পরিকল্পনা করতে শুরু করে দেবে, এবং আপনি সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করলে পরিস্থিতিও পরিবর্তন করতে পারবেন। কিন্তু সমস্যা হল আপনার পরিকল্পনা যদি আপনার মনের আবেগের বিরুদ্ধে হয়, তাহলে আপনি সেই পরিকল্পনা স্থির হয়ে টিকে থেকে কাজ করতে পারবেন না, এবং আপনি পরিস্থিতি পরিবর্তনের দায়িত্ব সময়ের হাতে তুলে দেবেন, এবং অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। হয়তো সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু আপনি নিজের মস্তিষ্কের ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারলেন না। এখানে আপনার মন আপনার বাধা হয়ে দাঁড়ালো। এ কথাও সত্য যে জীবনে এমন কিছু পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যেখানে আমাদের কিছু করার থাকে না, তাই বলে জীবনের সমস্ত পরিস্থিতি সময়ের উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। মানুষের জীবনে কখন কেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বা কখন কোন সমস্যা বা জটিলতা সৃষ্টি হবে তা আপনার হাতে নেই, কিন্তু যা আপনার জন্য ভালো আপনার ওপর যারা নির্ভর করছে, তাদের জন্য যেটা মঙ্গলজনক আপনার সেটাই করা উচিত, সেই পরিকল্পনা আপনার আবেগের বিরুদ্ধে হলেও, যদি আপনি সেই আবেগকে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্তে টিকে থাকতে পারেন, তাহলেই আপনি আপনার মস্তিষ্কের শক্তি ব্যবহার করতে পারবেন। মস্তিষ্কের শক্তিকে ব্যবহার করা তেমন কোন রকেট সাইন্স নয়, যে খুব কঠিন আপনি পারবেন না, আপনাকে শুধু মস্তিষ্কের কাজ করবার পদ্ধতি বুঝতে হবে। যেমন প্রত্যেক মানুষেরই কোনো না কোনো কারণে কখনো না কখনো মন খারাপ হয়, আবার মন খারাপ ও চিরদিন থাকে না, কোন না কোন কারণে মন ভালো হয়ে যায়, আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে ঠিক কোন কোন কারণে আপনার মন খারাপ থাকলে ভালো হয়ে যায়, কারণ মন কখন কিভাবে খারাপ হবে তার নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে না থাকলেও মন ভালো করার দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে, তাই যে কারণে আপনার মন ভাল হয় সেই কাজগুলো করুন। 

আমাদের মস্তিষ্ক অত্যন্ত শক্তিশালী ও বুদ্ধিমান হলেও নিজের থেকে সত্য মিথ্যা যাচাই করে না। মন যেভাবে প্রভাবিত করে সেই ভাবেই পরিচালিত হয়। যেমন কোন প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে বিচ্ছেদ হওয়ার ফলে তারা অত্যন্ত ভেঙ্গে পড়ে, তারা অনুভব করে জীবনের সমস্ত কিছু শেষ হয়ে গেলো, তারা মানসিক ও শারীরিক দিক থেকে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু বাস্তবে তাদের জীবনে সবকিছুই ঠিক আছে, শুধু ভালোবাসার মানুষটার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। সেই কারণে মন জীবনের সবকিছু উপেক্ষা করে কল্পনা করছে যে জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে, যেটা আসলে সত্য নয়। আরও একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবেন যেমন ধরুন আপনি রাস্তা থেকে হেঁটে যাচ্ছেন, একটি বড় ষাঁড় গরু আপনাকে তাড়া করেছে, আপনি ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে একটি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেন। তাহলে লক্ষ করুন আপনার সাথে কি কি ঘটনা ঘটলো ষাঁড় আপনাকে তাড়া করেছে, ভয়ে আপনার বুক ধকপক করছে, আপনি আতঙ্কিত হয়েছেন, দৌড়ানোর ফলে আপনার পরিশ্রম হয়েছে, আপনি ঘেমে যাচ্ছেন। এমন কোন ঘটনা যে কোন মানুষের সঙ্গেই ঘটুকনা কেন তার শারীরিক মানসিক activity অনেকটা একই রকম হবে। আবার ধরুন আপনি ঘুমিয়ে আছেন, একটি স্বপ্ন দেখলেন, যে একটি ষাঁড় আপনাকে তাড়া করেছে, আপনি দৌড়ে কোন নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে এগোচ্ছেন, হঠাৎ আপনার ঘুম ভেঙে দেখলেন আপনি বিছানায় আছেন, কিন্তু আপনি অনুভব করতে পারছেন যে স্বপ্নের মধ্যেও আপনার সাথে যা ঘটেছে, তার জন্য শারীরিক মানসিক activity একই রকম কাজ করছে। অর্থাৎ মস্তিষ্ক একটি কল্পনাকেও সত্য মেনে, শরীরকে একই রকম ভাবে পরিচালনা করছে। তাহলে এখান থেকে প্রমাণ হয় যে মস্তিষ্ক সত্য মিথ্যা যাচাই করে না, তাই মস্তিষ্কের এই বিষয়ের সুযোগ নিয়ে আপনি নিজের মতো করে মস্তিষ্ক প্রভাবিত করতে পারেন। তাহলে দেখা যাক কিভাবে মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করানো যায়। ধরুন আপনি একজন দরিদ্র, কোন সমস্যা দেখলে ঘাবড়ে যান, হঠাৎ করে রাগ উঠে যায়, তাহলে আপনি নিজেকে বলুন আমি রাজা, আমি যেকোনো সমস্যা ঠান্ডা মাথায় সমাধান করি, আমি খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ, প্রথম প্রথম আপনার মস্তিষ্ক এগুলো রিজেক্ট করে দেবে, গ্রহণ করবে না, কিন্তু কথাগুলো মিথ্যে হলেও প্রতিদিন কম করে দশ বারো বার বার উচ্চারণ করে, এগুলো নিয়ে চিন্তা করার অভ্যাস করলে, আপনার মস্তিষ্ক কথাগুলো ধীরে ধীরে সত্য বলে মেনে নিতে শুরু করবে। আর মস্তিষ্ক কথাগুলো মেনে নিতে শুরু করলে, আপনার শারীরিক মানসিক activity তেমনভাবেই গঠন করতে শুরু করে দেবে, অর্থাৎ পকেটে অর্থ না থাকলেও রাজার মত অ্যাটিটিউড, আপনার মধ্যে থাকবে, সমস্যা দেখলে সেটা সমাধান করবার উৎসাহ জাগবে, কেউ কেউ রাগের কথা বললেও সহজে রাগ উঠবে না। 

আমাদের মস্তিষ্ক অনেকটা কম্পিউটারের মত যে ধরনের প্রোগ্রাম সেটিং করা হয়, সেই ভাবে কাজ করে তাই নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী বিষয়গুলো চিন্তা করে, সেগুলো বারবার উচ্চারণ করে, চর্চা করার মাধ্যমে মস্তিষ্কে সেটিং করে দিন। কোন তথ্য মস্তিষ্কে ফিট হয়ে গেলে, তার স্বভাব অনুযায়ী আচরণ আপনাকে দিয়ে করিয়ে নেবে, আপনাকে শুধু সেগুলোর যত্ন করে পালন করতে হবে। সবার মস্তিষ্কে কিছু না কিছু বুদ্ধি থাকে, কিন্তু কোন কাজে সেই বুদ্ধিগুলো ব্যবহার করলে সব থেকে ভালো ফল পাওয়া যাবে সেই বুদ্ধি সবার থাকে না। তাই কিছু মানুষ খুব বুদ্ধিমান হয়েও জীবনে কোনো ক্ষেত্রেই তেমন কোন উন্নতি করতে পারে না। আবার যারা নিজের বুদ্ধিকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করার পদ্ধতি শিখেছেন, তারা নিজের জীবনে অনেক উন্নতি করেছে। নিজের বুদ্ধিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হলে, সবার প্রথমে নিজের যোগ্যতা সম্বন্ধে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। প্রতিটি মুহূর্তেই মানুষের মনে কিছু না কিছু চিন্তা উৎপন্ন হয়, ভালো চিন্তা, খারাপ চিন্তা, এগুলো আসে আবার চলে যায়, যে চিন্তা গুলো আমাদের মনকে প্রভাবিত করে, সেই চিন্তাগুলো আমাদের মন ভাল করে, অথবা খারাপ করে দেয়, আবার হারিয়ে যায়। তাই আমরা মাঝে মাঝে বুঝে উঠতে পারি না, মন ভালো বা খারাপ হওয়ার কারণটা কি? আবার কখনো কোন চিন্তা অনেকক্ষণ থেকে যায়, যেগুলো আমাদের দিন ভাল বা খারাপ করার ক্ষমতা রাখে, কিছু চিন্তা খুব ভালো আইডিয়া নিয়ে আসে, জীবন পরিবর্তন বা সমস্যা সমাধানের সুন্দর ধারণা দিয়ে যায়, মনে খুব আনন্দ জাগে, আবার অন্য চিন্তা চলে আসে, আর আমরা সব ভুলে যাই, সেই কারণে এমন ধারণা গুলো মূল্যবান হলেও আমাদের জীবনে তার কোন মূল্য নেই। তাই যখনই কোন ভালো চিন্তা বা ধারণা মাথায় আসে সেটা লিখে ফেলতে হবে, এবং সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে, চিন্তা একই ধরনের চিন্তা সৃষ্টি করে। মস্তিষ্কে ভালো ধারণাগুলো সেটিং করে দিতে হবে, আর ভালো চিন্তা বা ধারণা কখন আসবে এটা বোঝা অসম্ভব, কিন্তু তা গ্রহণ করার জন্য আপনাকে সচেতন ভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, এবং সেগুলো নিজের যোগ্যতা দ্বারা কাজে ব্যবহার করতে হবে, কাজেই মানুষের যোগ্যতা বাড়িয়ে তোলে, আর যোগ্যতা বাড়িয়ে তুলে মানুষের আত্মবিশ্বাস। তাই সবসময় নিজেকে প্রশ্ন করুন কিভাবে নিজের যোগ্যতা বাড়িয়ে তোলা যায়, আপনার মস্তিষ্কই আপনাকে নানান ধরনের পথ দেখাবে। একটা বিষয় মনে রাখবেন আমাদের মস্তিষ্কে ভালো-মন্দ সব রকম যুক্তি আছে, মন যেটাকে সহজ মনে করে সেটাকেই গ্রহণ করার চেষ্টা করে। উদাহরণস্বরূপ ধরুন আপনার দুইজন কর্মচারী, একজন এর নাম জয় আর একজনের নাম পরাজয়, দুজনই আপনার সঙ্গে থাকে এবং আপনি যে কোন কাজের জন্য তাদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করেন, জয় বাবু সে কাজের ভালো দিকগুলো সহ আপনার ক্ষমতার বিষয়গুলো তুলে ধরে, অর্থাৎ কিভাবে এবং কেন আপনি এই কাজ করে সফল হবেন। আর পরাজয় বাবু কাজের খারাপ দিক গুলো তুলে ধরে, এবং আপনার দুর্বলতা গুলো দেখিয়ে, আপনাকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেয়, যে আপনি কেন অসফল হবেন, আর মন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরাজয় বাবুর সমর্থন করে। কারণ পরাজয় বাবুর কথা শুনলে আপনাকে কিছুই করতে হবে না, অর্থাৎ নতুন কোন সমস্যায় পড়তে  হবে না, তার সমাধানও করতে হবে না। আমাদের মন ও মস্তিষ্ক ঠিক এইভাবেই কাজ করে, তাই আমরা কোনো কাজের সমস্যার কথা চিন্তা করে, ভীত হয়ে কোন কাজ শুরু করতে পারি না, অথবা শুরু করলেও শেষ করতে পারি না। তাই আমাদের উচিত পরাজয় বাবুকে উপেক্ষা করে, জয় বাবুর পরামর্শ গ্রহণ করা, অর্থাৎ নেগেটিভ চিন্তা গুলো, পজেটিভ চিন্তার দ্বারা পরিবর্তন করা, এইভাবে অভ্যাস করতে হবে। আর যে কোন বিষয় নিয়ে অনবরত চিন্তা করলে সেই চিন্তা মস্তিষ্কে হাবি হয়ে যায়, তা ভালো চিন্তা হোক বা খারাপ চিন্তা, সে কারণে আমাদের খারাপ চিন্তাগুলো উপেক্ষা করে ভালো চিন্তা গুলো মস্তিষ্কে স্থাপন করতে হবে। প্রাকৃতিক নিয়মে আমাদের মনে খারাপ চিন্তাও আসবে, কিন্তু সেগুলো পোষণ করা যাবে না, শুধুমাত্র ভালো চিন্তা গুলোই পোষণ করতে হবে। চিন্তার দ্বারা চিন্তা সৃষ্টি হয়, অর্থাৎ আপনি যেমন চিন্তা করবেন আপনার মস্তিষ্কে নতুন নতুন সেই ধরনের চিন্তা বা ধারণা সৃষ্টি হবে, ঠিক যেমন একটি দুঃখের কথা মনে পড়লে পরপর আরো দুঃখের কথা মনে পড়ে। তাই আমাদের ভালো চিন্তা করার অভ্যাস করতে হবে। আর কোন কিছু অভ্যাস হয়ে গেলে সেটা আমাদের অবচেতন মনে রেকর্ড হয়ে যায়, তখন আবার খুব একটা যত্ন করবার প্রয়োজন থাকে না। যেমন একটি চারা গাছকে যত্ন করতে হয়, গাছটি বড় হয়ে গেলে তখন আর যত্ন করার প্রয়োজন থাকেনা। একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝালে আরো ভালো বোঝা যাবে। যেমন সবাই কোন না কোন কাজে পারদর্শী, সে যে কোন কাজই হতে পারে, ধরুন কেউ ভালো সবজি কাটে বা কেউ ভালো গাড়ি চালায়, কিন্তু যখন সে এই কাজ প্রথম শুরু করেছিলেন, তখন তাকে অত্যন্ত সাবধানে কাজ করতে হয়েছে, যেমন সবজি কাটতে গিয়ে হাত না কেটে যায়, গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা না ঘটে, সব সময় তাকে সর্বদা সচেতন ভাবে মনোযোগ সহকারে সবকিছু করতে হয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যাওয়ার ফলে সে অন্য চিন্তা করতে করতেও সেই কাজ করতে পারে, অর্থাৎ অবচেতন মনে সে কাজের সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া গুলো রেকর্ড হয়ে গেছে, এবং অবচেতন মন সেই কাজের সময় শরীরকে বিশেষ ভাবে পরিচালনা করে, আর একেই বলা হয় অভ্যাস। আর নতুন নতুন ভালো অভ্যাসের দ্বারা আমাদের খারাপ অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করতে হবে, কারণ মানুষ হলো অভ্যাসের দাস, অর্থাৎ যেমন ভাবে তার মস্তিষ্কে অভ্যাস গঠন হয়ে রয়েছে, তেমন প্রতিফলন তার আচরণেও প্রকাশ পাবে। সুতরাং ভালো চিন্তা করে যদি সেই চিন্তা ধরে রাখার স্বভাব ও সেই চিন্তা অনুযায়ী কাজ করার অভ্যাস হয়, এবং একটা মানুষের ভিতরে জগৎ যদি উন্নত হয়, তাহলে বাইরে জগত সহজেই পরিবর্তন করা যায়। অর্থাৎ বড় হতে গেলে বড় মনের মানুষ হতে হবে, তবেই ভালো থাকা যাবে, এবং অন্যদের ভালো রাখা যাবে। আপনার আচরণেই আপনার পরিচয় গঠন করে, এবং আপনার পরিচয় আপনার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে, অর্থাৎ আপনি যদি রাজা হতে চান তাহলে রাজার গুনাবলী নিজের ভেতর উন্নত করুন, রাজার মত মানুষের সেবা করে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করুন, আপনি যত মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন আপনি তত মানুষের রাজা হয়ে যাবেন। কিন্তু একটা বিষয় মনে রাখতে হবে সবাই আপনাকে পছন্দ করবে না, কিছু মানুষ আপনার বিরোধিতা করবে, অন্যরা যখন আপনার প্রশংসা করে, তখন আপনার যতটা ভালো লাগে, তার থেকে অনেক বেশি খারাপ লাগবে যখন আপনার সমালোচনা করবে, আপনার নামে খারাপ কথা বলবে, আপনাকে উপেক্ষা করবে, তখন আপনার হৃদয় আগুন জ্বলে যাবে, এগুলোও আপনাকেই সহ্য করতে হবে, তবু আপনাকে মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্ত কাজ করতে হবে, কারণ এই এই সমস্ত কিছুর দ্বারা আপনি প্রভাবিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলে, সিদ্ধান্ত ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে, তাহলে আপনি মনের আবেগের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মস্তিষ্কের শক্তিকে ব্যবহার করতে পারবেন না। আমাদের সকলের কিছু প্রিয় মানুষ থাকে, কিছু অপ্রিয় মানুষ থাকে প্রিয় মানুষকে আমরা ভীষণ ভালোবাসি, এটা বলারও কোন প্রয়োজন নেই, কারণ মানুষের আচরণেই তা প্রকাশ পায়। আবার অপ্রিয় মানুষকে ঘৃণা করি এটাও মুখে না বললেও আচারনে বোঝা যায় কারণ প্রিয় অপ্রিয় মানুষের জন্য আমাদের মন প্রভাবিত হয় এবং মস্তিষ্কের অবচেতন অংশ সেই ভাবেই একটিভ হয়ে যায়, তাই মস্তিষ্কের শক্তি কাজে লাগাতে হলে অপ্রিয় মানুষের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে, আপনাকে অভ্যাস করতে হবে অপ্রিয় মানুষটারও ভালো দিকগুলো চিন্তা করে, সেই ভালো কাজের জন্য হৃদয়ে তার জন্য ভালোবাসার স্থাপন করা, তার ভালো কাজের জন্য তাকে প্রশংসা করা। যদি সম্ভব না হয় প্রকাশ করবার প্রয়োজন নেই, নিজের মনেই রাখুন। তবুও দেখবেন আপনি একটি বিশেষ অনুভূতির স্বাদ গ্রহণ করতে পারবেন, এবং আপনার মন নেগেটিভ প্রভাব থেকে মুক্ত হবে ও মস্তিষ্কের শক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে। একটি গাছের ডালে যদি পোকা লেগে যায়, তাহলে সম্পূর্ণ গাছটিকে বাঁচাতে গাছের ডালটি কেটে দেওয়া প্রয়োজন, কিন্তু তার আগে আপনাকে ডাল না কেটে পোকা মারার কোন মেডিসিন ব্যবহার করে ঠিক করার চেষ্টা করা উচিত, যদি তাতে কাজ না হয় তাহলে কেটে দেওয়া উচিত, কিন্তু যেটাই করুন হৃদয় দিয়ে করতে হবে। যেমন কোন মা তার সন্তানকে শাসন করে, বকা দেয় তাই বলে সন্তান তার শত্রু নয়, এবং এবং সন্তানের প্রতি তার ভালবাসা কমে যায় না, ঠিক তেমনই হৃদয়ে সকলের জন্য ভালোবাসা রাখতে হবে। প্রত্যেক মানুষ চায় জীবনে উন্নতি লাভ করে সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এই দুই দিক ব্যালেন্স করতে পারেনা কেউ জীবনে উন্নতি প্রচুর করে, কিন্তু দেখা যায় মনে শান্তি থাকে না, আবার কিছু মানুষ শান্তি রক্ষা করতে গিয়ে উন্নতি করতে পারেনা, কারণ তারা কোন একটি বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেয়, ফলে শুধু সেই বিষয়ের দিকেই উন্নতি লাভ করে। জীবনে উন্নতি লাভ হয় যোগ্যতা দ্বারা, আর শান্তি লাভ হয় বাস্তব উপলব্ধির দ্বারা, অর্থাৎ আপনি সত্যকে যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন, তত তাড়াতাড়ি সুখ অনুভব করতে শিখে যাবেন। সুখ-দুঃখ কি কোন কারনে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া কিছু বিশেষ অনুভূতি, মানুষ যেমন চায় তেমনটা হলে সুখের অনুভূতি সৃষ্টি হয়, আর তেমনটা না হলে বা তার বিপরীত কিছু হলে দুঃখের অনুভূতি সৃষ্টি হয়। জীবনে এমন কিছু সুখের বা দুঃখের অনুভূতি প্রাপ্তি হয়, যে সেই সুখের অনুভূতি আবার পাওয়ার জন্য আমাদের মনে তার প্রতি বিশেষ আসক্তি সৃষ্টি হয়। আবার কোন অনুভূতি আমাদের এতটা ভিত করে দেয় যে তার কথা মনে পড়লেও ভীষণ কষ্ট হয়। এই সমস্ত অনুভূতি গুলোই সাময়িক, আপনাকে বুঝতে হবে কোন অনুভূতি চিরদিনের জন্য নয়, মানুষ থাকলে এই অনুভূতি হবেই, কিন্তু আপনি সত্যকে বুঝতে পারলে দুঃখ কম ভোগ করবেন এবং আপনার অভিজ্ঞতা দ্বারা দুঃখকে সহজেই দূর করতে পারবেন। মানুষ কোন কাজে সফল হলে সুখের অনুভূতি প্রাপ্ত করে তাই সকলেই সফল হতে চায়। কিন্তু আপনি যে কাজ করে সফল হতে চাইছেন, সেই কাজের মধ্যেও যদি সুখের যদি সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারেন, তাহলে আপনার সফলতার আনন্দ অনেক বেড়ে যাবে এবং ব্যর্থতাও আপনাকে খুব দুঃখ দিতে পারবে না, এবং আপনি পরবর্তী প্রচেষ্টা আরো অভিজ্ঞতা ও উৎসাহ নিয়ে করতে পারবেন। কিন্তু যদি সফলতা প্রাপ্তির জন্যই দুঃখ কষ্ট ভোগ করেন, এবং যদি ব্যর্থ হন, আপনার দুঃখ বহুগুণ বেড়ে যাবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস থাকবে না। তাই বলা হয় গন্তব্যে পৌঁছোনই শুধু লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়, রাস্তার আনন্দ উপভোগ করতে হবে। পৃথিবীতে তিন ধরনের কর্ম হয়, 

এক. আপনি জিতে গিয়েও হেরে যাবেন, এবং হেরে গিয়েও হেরে যাবেন। 

দুই. আপনি জিতে গেলে জিতে যাবেন, হেরে গেলে হেরে যাবেন। 

তিন. আপনি জিতলেও জিতবেন, আপনি হারলেও জিতবেন। যেখানে জেতা হারার কোন ভয় থাকে না। 

প্রথমটি হয় আসক্তির কারণে, যা পূরণ হলে উপলব্ধির মাধ্যমে বুঝবেন আপনি হেরেছেন, আর পূরণ না হলে, আপনার মন আপনাকে বারবার বোঝাবে যে আপনি হেরেছেন। 

দ্বিতীয়টি হয় সমাজের নিয়মে। 

আর তৃতীয়টি হয় সত্যকে উপলব্ধি করে। আমাদের প্রাচীনকালের ঋষি মণিরা চৈতন্য জাগানোর কথা বলেছেন, অর্থাৎ সচেতন বা সজাগ থাকতে বলেছেন, কিন্তু কোন কিছুর সাথে সম্পর্কযুক্ত করে আপনি কখনোই চেতনার বিকাশ করতে পারবেন না। তাই সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আপনাকে সবকিছু উপলব্ধি করতে হবে, এমনকি নিজের থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়েও, কারণ নিজের সাথে যুক্ত হয়ে থাকলে আমিত্ব ভাব থেকে যায়, আর আমিত্ব ভাব সত্যকে উপলব্ধি করতে দেয় না। যেমন আজ পর্যন্ত আমি যা কিছু অর্জন করেছি সবকিছুই আমার, কিন্তু সত্য হল কোন কিছুই আমার নয় আমি শুধু এগুলো একত্রিত করেছি, এবং রক্ষণাবেক্ষণ করছি। যাদের সঙ্গে আমি একসাথে জীবন-যাপন করি তারাই আমার আপন, কিন্তু সত্য হলো কেউ আমার নয় কারণ আমি একা এসেছি এবং একাই চলে যাব, আমি শুধু নিজের স্বার্থে এদের সঙ্গে থাকি, কারণ এদের সাথে থেকে আমার আনন্দের অনুভূতি হয়, অথবা একা থাকতে ভয় করে। আমি সবাইকেই ভালোবাসি কিন্তু সত্য হল আমি তাদের থেকেও ভালোবাসা পেতে চাই, ইত্যাদি। এইভাবে চিন্তা করলে সবকিছুর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যায়, প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করতে সহজ হয়। সত্য উপলব্ধি করার অভ্যাসে, কোন দুঃখ-কষ্ট আপনার মনে ঘাঁটি গেড়ে বসতে পারবেনা, এবং আপনি বুঝতে পারবেন কোথায় কোন কর্ম করা উচিত। আপনি বিচ্ছিন্ন হয়ে উপলব্ধি করতে পারলে, এই প্রকৃতির সঙ্গে সুন্দরভাবে সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন, এবং অন্য মানুষের সাথে খুব সহজে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন। মানুষ একা হলেও তার চরিত্র কিন্তু অনেকগুলো, যেমন আপনি কারো পিতা, কারো ভাই, কারো বন্ধু, কারো সন্তান, কারো বস, কারো কর্মচারী, ইত্যাদি, এইসব দায়িত্ব আপনাকেই পালন করতে হবে, এবং সুন্দরভাবেই করতে হবে। যদি আপনি এর মধ্যে কোন কিছুর সাথে তীব্র মানসিকভাবে যুক্ত থাকেন, তাহলে বাকি সম্পর্ক গুলো আপনি সুন্দরভাবে রক্ষা করতে পারবেন না। তাই আপনাকে বিচ্ছিন্ন হতেই হবে, এবং বাকি সম্পর্ক গুলোকেও সুন্দরভাবে রক্ষা করতে হবে। যেমন আপনি যখন আপনার সন্তানের সাথে, তখন আপনি শুধুমাত্র একজন পিতা, তখন বাকি সবকিছু ভুলে গিয়ে আপনাকে শুধুমাত্র একজন পিতার মতোই আচরণ করতে হবে। যখন আপনি বন্ধুর সাথে, তখন শুধু বন্ধুর মতোই আচরণ করতে হবে। যখন আপনি বসের সাথে, তখন আপনার কর্মচারীর মতোই আচরণ করতে হবে। অর্থাৎ যখন যে কর্ম করছেন তখন বাকি সবকিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে শুধু সেই কর্মে মন দিতে হবে। তাহলে দেখবেন আপনি সবকিছু খুব সুন্দর ভাবে করতে পারছেন, সবকিছু সুন্দরভাবে সামলাতে পারছেন, এবং আপনার মন ভালো থাকবে ও মস্তিষ্কের ক্ষমতাও আরো সুন্দরভাবে ব্যবহার করে, নিজেকে উন্নত মানুষ তৈরি করে, জীবনে উন্নতি লাভ করে, অন্যদের সহযোগিতা করার পাশাপাশি তাদের গুরুত্ব বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

প্রত্যেক মানুষের জীবনে এমন কিছু ঘটনা থাকে সেই স্মৃতিগুলো মনে করে মানুষ সুখী বা দুঃখী হয়, সেই ঘটনাগুলো মানুষ দীর্ঘদিন মনে করে রাখতে পারে, এর কারণ হলো সে ঘটনাগুলো মানুষ বারবার কল্পনা করে এবং যত বেশি কল্পনা বা চিন্তা করে, মানুষের স্মৃতিতে তত শক্তিশালী ভাবে সেগুলো রেকর্ড হয়ে যায়। যেমন একটি হিন্দি গানে বলা হয়েছে, ভুল গেয়া সব কুছ ইয়াদ নেহি আব কুছ, ব্যাস এক বাত নেহি ভুলি। অর্থাৎ একটি বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে করতে বাকি স্মৃতিগুলো অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মস্তিষ্ক এমনভাবেই কাজ করে, আর আপনিও এই সিস্টেম ব্যবহার করে আপনার স্মৃতিকে বৃদ্ধি করতে পারেন। যেমন আপনার জীবনে যে আকাঙ্ক্ষা সেগুলো মাঝে মাঝে চিন্তা করুন অথবা কোন কাগজে লিখে রাখুন, সেগুলো মাঝে মাঝে পড়ুন, মোটকথা সেগুলো যাতে মাঝে মাঝে আপনাকে মনে করিয়ে দেয় এমন কিছু করে রাখুন, তাহলে খুব সহজেই আপনার স্মৃতিতে রেকর্ড হয়ে যাবে। আপনি প্রতিদিন রাতে সারাদিন যা কিছু করেছেন সেগুলো একটু সময় করে কল্পনা করুন, ভালো খারাপ বিষয়গুলো খুব সহজেই বুঝতে পারবেন, এবং সেই কল্পনার মধ্যে যদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে, সেগুলো লিখে রাখুন, এই ছোট ছোট পদক্ষেপ গুলো আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সাথে সাথে, আপনার জীবন পরিবর্তন করে দেবে। আমাদের মস্তিষ্ক কখনোই কর্মবিহীন থাকতে পারেনা, তাই মস্তিষ্কে কিছু না কিছু চিন্তাভাবনা চলতেই থাকে, তাই মস্তিষ্ককে প্রয়োজনীয় চিন্তা দিয়ে ব্যস্ত রাখুন, যাতে প্রয়োজনীয় চিন্তা মস্তিষ্কে হাবি হয়ে যায়। তা না হলে মস্তিষ্কে কোনো অনর্থক চিন্তা হাবি হয়ে যেতে পারে। যেমন ধরুন জীবনে কখনো আপনার এমন কিছু প্রাপ্তি হলো, তখন আপনার মধ্যে কিছু বিশেষ আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। সেই ঘটনা আপনার মনে বিশেষ ছাপ ফেলেগেছে, আর সেই ঘটনা আপনি বারবার কল্পনা করছেন। আর আপনি যত বেশি কল্পনা করছেন, আপনার স্মৃতিতে তত গভীরভাবে ছাপ ফেলছে, আপনি তেমন কিছু আবার প্রাপ্তি করতে চাইছেন, এবং প্রাপ্তি করবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে চলেছেন, কিন্তু তবুও প্রাপ্তি হচ্ছে না, এই অবস্থায় মন মস্তিষ্কে ওই চিন্তা হাবি হয়ে যায়, এই অবস্থায় মানুষের প্রচন্ড কষ্ট হয়, দুঃখ হয়, রাগ হয়, ঈর্ষা হয়, কিন্তু তবুও মন মস্তিষ্ক সেই বিষয় নিয়েই চিন্তা করে, কারণ সেই যে প্রাপ্তির অনুভূতি তা আর পাওয়া যাবে না সেটা ভাবতে ও খুব কষ্ট হয়। অর্থাৎ মন মিথ্যে আশা নিয়ে থাকতে রাজি, কিন্তু সত্যকে স্বীকার করতে রাজি নয়, কিন্তু একসময় সবকিছুই বুঝতে পারে ততদিনে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। এই প্রকৃতিতে সব সময় কিছু না কিছু ঘটে চলেছে কোন ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটে না। যেমন ধরুন বৃষ্টির সময় আপনি বাইরের দিকে তাকিয়ে আছেন, হঠাৎ করে বৃষ্টির জলে একটি নীল রঙের বুলবুলা দেখতে পেলেন, যেটা দেখে আপনার মনে বিশেষ এক আনন্দের অনুভূতি হয়েছে, আর সেই অনুভূতি প্রাপ্তির জন্য আপনি সেটা আবারও দেখতে চান, তাই বৃষ্টি হলেই আপনি বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকেন, এই আশা নিয়ে যে তেমন কিছু আবার দেখতে পাবেন, এবং আপনি আবার আনন্দিত হবেন। এমনটা আর কখনো হবেনা আপনাকে শুধু এটুকু বুঝতে হবে, এবং নিজেকে এই ধরনের চিন্তা থেকে মুক্ত করতে হবে, আর এটা সময়ের উপরে ছেড়ে দিলে অনেক সময় নষ্ট হবে, এবং নিজে চেষ্টা করলে খুব সহজেই বেরিয়ে আসতে পারবেন। নেগেটিভ চিন্তা দূর করা যায় পজিটিভ চিন্তার দ্বারা, এর জন্য আপনি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন, যেমন একটি কাগজ-কলম নিয়ে বসুন এবং এক এক করে আপনার জীবনের উদ্দেশ্য গুলো লিখুন, আপনি জীবনে কি করতে চান, কি পেতে চান, ইত্যাদি ইত্যাদি, এক এক করে সব লিখুন এবং এক একটা করে সেই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করুন, যে কিভাবে এই কাজগুলো সম্পন্ন করা যায়। আপনার উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য প্রতিটি বিষয় নিয়ে ভাবুন, এবং যদি চিন্তা করতে করতে নতুন কোন আইডিয়া আসে, সেটাকে লিখে ফেলুন, যদি কোন আইডিয়া না আসে তাহলে কিছুক্ষণ চিন্তা করে ওটা ছেড়ে দিন, পরের টপিক নিয়ে ভাবুন। এইভাবে নিয়মিত অভ্যাস করলে আপনার চিন্তা করবার কৌশল ভালো হবে, এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন। মানুষের মনে যখন দুঃখ থাকে তখন মানুষ কোন কাজে মন লাগাতে পারে না, আর মানুষ যখন আনন্দের মধ্যে থাকে, তখন কোনো কাজের সময় পায়না, কোথা থেকে যেন সময় কেটে যায়। এই দুই অবস্থায় যদি কাউকে এক ঘন্টার কাজও দেওয়া হয় তাহলে দেখা যায় যে সেই এক ঘন্টার কাজ একমাস পরে আছে, করা হয়নি, আর বেশিরভাগ মানুষের এটাই বৈশিষ্ট্য। তাহলে মানুষ কাজ করবে কখন? কিন্তু এই মানুষগুলোই জীবনে কখনো একদিনে অনেক কাজ করেছে, বাইরের সমস্ত কাজ সেরে এসে আবার ঘরের কোন কাজও করেছে, তাহলে এতে এই প্রমাণ হয় যে কাজ করলেই কাজ করা যায়। তাই সঠিক সময়ের অপেক্ষা না করে যে কাজ প্রয়োজনীয়, তা শুরু করে দিন, কাজ শুরু করলে কাজের মুড সৃষ্টি হয়, শুধু একটু শুরু করারই অপেক্ষা। আপনার চিন্তা যদি বিশুদ্ধ হয় এবং আপনি আপনার মস্তিষ্ক ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় কর্মগুলো করতে থাকেন, তাহলে আপনি সফলতা যতটুকুই অর্জন করুন না কেন, আপনার জীবন সার্থক হবে। মানুষ যা কিছু করে তা শুধু সুখ প্রাপ্তির জন্য করে, সুখ বলতে এক ধরনের বিশেষ অনুভূতি, সেই অনুভূতির স্বাদ পাওয়ার জন্য মানুষ সমস্ত কর্ম করে, আর যেই কর্মে ওই অনুভূতি পাওয়ার সম্ভাবনা যত বেশি সেই কাজ তত উৎসাহের সঙ্গে করে, অর্থাৎ যতক্ষণ বিশ্বাস থাকে ততক্ষণ আগ্রহ বেশি থাকে, যখন কোন কাজে বিশ্বাস থাকে না সন্দেহ সৃষ্টি হয় বা তা প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকে না, তখন কোন উৎসাহ থাকে না, কিন্তু তবুও যদি সেই কাজ করতেই হয়, মানুষ নিরুৎসাহিত ভাবে কাজ করে, মনের কষ্ট মনে চাপা দিয়ে রেখে। প্রতিটি মানুষের চাহিদা হল সেই বিশেষ অনুভূতি যা তার ভালো লাগে তাকেই সুখ বলা যায়, সেই অনুভূতি পাওয়ার জন্য মানুষ নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী পথ বেছে নিয়েছে। যেমন কেউ খেয়ে সুখপায়, তো কেউ ঘুমিয়ে, কেউ ধন অর্জন করে সুখ পায়, তো কেউ অন্যের সেবা করে, কেউ সুরক্ষিত অবস্থায় সুখ পায়, তো কেউ জীবন বাজি রেখে, কেউ নিজের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করে সুখ পায় তো কেউ নিজের দুঃখ কষ্ট পুষে রেখে সুখ পায়, ইত্যাদি ইত্যাদি। যে যাই করুক না কেন মূল চাহিদা সেই বিশেষ অনুভূতি, যা তার ভালো লাগে। প্রতিটি মানুষের সিস্টেম একই ভাবে কাজ করে, কিন্তু প্রত্যেক মানুষের মধ্যে আলাদা আলাদা তথ্য রেকর্ড থাকার জন্য সকলের স্বভাব ও কর্ম আলাদা হয়। কিছু মানুষ জ্ঞানে অজ্ঞানে তার মধ্যে যে তথ্য রেকর্ড হয়েছে, তার দ্বারা যে স্বভাব চরিত্র বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয়েছে, সেই অনুরূপ জীবন যাপন করে ও চলে যায়। আর কিছু মানুষ নিজেকে উপলব্ধি করে, নিজের ভালো খারাপ বৈশিষ্ট্য বোঝার চেষ্টা করে, এবং যেমন তথ্য দ্বারা খারাপ বৈশিষ্ট্য গুলো পরিবর্তন করা যায় তেমন তথ্য সংগ্রহ করে, নিজেকে আরো উন্নত করতে চেষ্টা করে, এবং যতটা চেষ্টা করে ততটা উন্নত হয়। মানুষ যা বিশ্বাস করে জ্ঞান-অজ্ঞানে সেই কর্মই করে, কোন মানুষ মুখে যাই বলুক না কেন হৃদয় যে বিশ্বাস স্থাপন হয়ে থাকে, সেই কর্মই করে, যেমন কোন নাস্তিক মানুষ ঈশ্বর বিশ্বাস করে না, ভগবানের বিরোধিতা করে, ভগবান নেই তার যুক্তি দিয়ে থাকে, কিন্তু দেখা যায় কখনো প্রচন্ড সমস্যায় পড়লে ভুল করে ভগবানকে স্মরণ করে। আবার অনেক মানুষ ভূত বিশ্বাস করে না, ভুত বলতে কিছু হয় না তাদের কাছে তার সমস্ত যুক্তি আছে, কিন্তু তবুও যদি কখনো অন্ধকার রাতে নিস্তব্ধ অচেনা কোন শ্মশান বা কোন কবরস্থানের পাশের থেকে যেতে হয়, তখন নাস্তিকের মুখে ও রাম নাম বেরিয়ে আসে। এর কারণ হলো বহু মানুষের কাছে এই কথা শুনতে শুনতে এবং অন্যদের বিশ্বাস দেখে, বিভিন্ন সিনেমা দেখে তাদের মস্তিষ্কের কোন অংশে এগুলো রেকর্ড হয়ে আছে। সে কারণে জ্ঞানে অজ্ঞানে এগুলো বিশ্বাস হয়ে যায়। তাই বারবার কোন তথ্য আমাদের ইন্দ্রীয়ের মাধ্যমে বা চিন্তা করে কল্পনা করে আমাদের মস্তিষ্কে প্রবেশ করলে, সেটা গভীরভাবে রেকর্ড হয়ে যায়, আর এই তথ্যই মানুষকে শক্তিশালী বা দুর্বল করে তোলে, এবং তা ধীরে ধীরে বিশ্বাসে পরিণত হয়। তাই জ্ঞানে অজ্ঞানে আপনি যে তথ্য সংগ্রহ করছেন তা আপনার বিশ্বাসের পরিণত হবে, আর বিশ্বাস ফল প্রদান করে। যেমন আপনার যদি মনে হয় আপনি ভীত অর্থাৎ ভয় পাচ্ছেন, মস্তিষ্ক সেটাকে মেনে নিয়ে আপনার শরীর দুর্বল করে দেয়, এবং আপনি যদি মনে করেন আপনি সাহসী, মস্তিষ্ক সেটাকে মেনে নিয়ে আপনার শক্তি বাড়িয়ে তোলে। এই বিশ্বাসের শক্তি দ্বারা মানুষের অসম্ভব কিছুও সম্ভব হয়ে যায়। জীবনে ভালো মন্দ অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা প্রাপ্তি হবে, আপনার কাজ শুধু ভালো টুকু গ্রহণ করে সেগুলো চর্চা করা।

ধন্যবাদ

#Astrologer

Dr prodyut Acharya

MA. M Phil. PhD in #Astrology 

মন্তব্যসমূহ

Astrologer Dr Prodyut Acharya, MA. M Phil. PhD. in asrtology gold medalist,

Astrologer Dr Prodyut Acharya, MA. M Phil. PhD. in asrtology gold medalist,
Online Astrology service and Palm reading, best Astrologer and palmist in india

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রধানমন্ত্রীর ডাকে প্রদীপ, মোমবাতি, জ্বালানোর সাথে উচ্চারণ করুন, সনাতনের আদি শব্দ "ওঁম"

ভাদ্র মাসে জন্ম হলে মানুষ কেমন হয়

শিব পুজো করার আগে জেনে নিন শিবলিঙ্গ কি?

পৃষ্ঠাসমূহ