|
গৌতম বুদ্ধ |
ধনী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রতিটা মানুষের মধ্যেই থাকে, ধনী হতে কে না চায় | আজ আমি আপনাদের কাছে বৌদ্ধ দর্শনের থেকে একটি গল্প তুলে ধরব |
এক সময় ভগবান বুদ্ধ এক গ্রামে ধর্মসভা করছেন, গৌতম বুদ্ধের ধর্ম সভায় অনেক মানুষ আসে যায়, ওই গ্রামের রাস্তার ধারে বসে ভিক্ষা করা এক ভিক্ষুক সেই মানুষগুলোকে ভালোভাবে লক্ষ্য করে | তিনি অনুভব করলেন যে ভগবান বুদ্ধের কাছে মানুষ যখন যায় তাদের মধ্যে হতাশা ও দুঃখের ভাব থাকে, কিন্তু যখন ওখান থেকে ফিরে আসে তখন তাদের মধ্যে সেই হতাশা ও দুঃখের ছাপ বলতে আর কিছুই থাকে না, তাদের মধ্যে বেশ প্রসন্নতা ও খুশি লক্ষ করা যায় | তিনি মনে মনে ভাবতে লাগলেন তাহলে আমিও বুদ্ধির কাছে যাব | যথারীতি তিনিও একদিন মহাত্মা বুদ্ধের কাছে গেলেন, সেখানে মানুষ লাইন দিয়ে নিজের সমস্যার কথা ভগবান বুদ্ধের কাছে জানাচ্ছেন, আর গৌতম বুদ্ধ তার সৎ উপদেশ দিচ্ছে | কিছু সময় পর তার ও সুযোগ এলো, ভগবান বুদ্ধের কাছে নিজের সমস্যার কথা জানাবার, তিনি গৌতম বুদ্ধকে বললেন, ভগবান আমি যে গ্রামে থাকি সে গ্রামের প্রত্যেকেই কম-বেশি সুখী ও সম্পদশালী, সবারই কিছু না কিছু আছে, তাহলে আমি এতো গরিব কেন | এই প্রশ্নের উত্তরে ভগবান বুদ্ধ তাকে বললেন, তুমি নির্ধন ও দুঃখী এই কারণে, তুমি আজ পর্যন্ত কাউকে কিছু দান করো নি | এই কথা শুনে সে ভিক্ষুক আশ্চর্য তো হয়ে গেল! তিনি বললেন ভগবান আমি নিজেই চলি খুব কষ্টে, ভিক্ষা করে কখনো খাবার জোটে আবার কখনো না খেয়ে থাকতে হয়, তাহলে আমার কাছে কি আছে অন্যকে দেওয়ার মতো? ভগবান বুদ্ধ চুপচাপ তার কথাগুলো মন দিয়ে শুনলেন, তারপর বললেন তুমি সব থেকে অজ্ঞানী, অন্যকে দেওয়ার মতো অনেক কিছুই ঈশ্বর তোমাকে দিয়েছেন | যেমন হাসি দিয়েছেন, তুমি তোমার মুখের একটু হাসির দ্বারা অন্যের মনে আশার আলো জ্বালাতে পারো, তোমায় বাক্য দিয়েছে, যার দ্বারা তুমি মিষ্টি ভাষা এবং অন্যের প্রশংসা করে তাকে উৎসাহ ও সৎ উপদেশ দিতে পারো, দুটি হাত দিয়েছে যার দ্বারা তুমি অন্যকে সাহায্য করতে পারো, যাদের কাছে এগুলো আছে তারা কখনোই দুঃখী ও নির্ধন হতে পারে না, যদি হয়ে থাকে তাহলে তার কৃপনতার কারণে সে কখনোই অন্যের সঙ্গে এগুলো কে ভাগ করে নেয় নি | আর আমি গরিব সবার প্রথমে নিজের মন থেকে এই বিচার ত্যাগ করো, মনে এই বিচার শুধু ভ্রম উৎপন্ন করে, আর এই ভ্রম দূর করা আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ | যদি তুমি তোমার মন থেকে দুঃখী ও নির্ধন তার বিচার দূর করো, তাহলে একদিন না একদিন তোমার নির্ধনতা ও দুঃখ-দুর্দশা দূর হয়ে যাবে |
ভগবান বুদ্ধের এই উপদেশ শুনে তার মন প্রফুল্ল তা পূর্ণ হয়েছে, এবং এই উপদেশ তিনি তার জীবনে কার্যকরী করেছে, তার ফলে তিনি তার জীবনে আর কখনোই দুঃখী হননি |
তাহলে বন্ধুরা এই গল্প থেকে আপনারা কি শিখলেন আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন | ঈশ্বর আমাদের এমন অনেক কিছুই দিয়েছে যা পৃথিবীর সকল মানুষ কে দান করলেও শেষ হবে না | আমরা একটু চেষ্টা করলেই অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে পারি বাংলায় একটা প্রবাদ আছে যে শুধু ধন থাকিলে হয় না ধনী |
যে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে পারে না তার ধনের কি দাম আছে সেই মানুষ পৃথিবীতে শব থেকে বেশী গরীব ও দুঃখী | শুধুমাত্র নিজের দৃষ্টি ও আচার-ব্যবহার পরিবর্তন করলে, জীবনে অনেক অনেক বেশি সফলতা অর্জন করা যায়, নিজে সুখী হয়ে অন্য কেউ খুশি রাখা যায় |
আজকের লেখায় পর্যন্তই নমস্কার
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত প্রকাশ করুন