প্রেম? সে তো নিঃশব্দ এক অনুভব!
.webp)
![]() |
MyAstrology |
যোগ শুধু শরীর নয়, চেতনার জাগরণ
ভারতীয় প্রাচীন দর্শনের অমূল্য রত্ন হল পতঞ্জলি যোগশাস্ত্র। এখানে শুধু শরীরচর্চা নয়, বরং মন, আত্মা এবং ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তির (Cosmic Energy) সঙ্গে গভীর সংযোগ স্থাপনই যোগের চূড়ান্ত লক্ষ্য।
পতঞ্জলি বলেন –
“Yogaś citta-vṛtti-nirodhaḥ”
অর্থাৎ যোগ হলো চিত্তবৃত্তির নিরোধ – মানে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে স্থিতিশীল করা।
🌌 ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তি কী?
ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তি হল সেই সর্বব্যাপী চেতনা, যা সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে বিরাজমান। আধুনিক বিজ্ঞান যেমন “Universal Energy” বা “Quantum Field”-এর কথা বলে, ভারতীয় যোগশাস্ত্রে একেই বলা হয় “পরম চেতনা”।
এই শক্তি:
আমাদের দেহে প্রবাহিত হয় প্রাণ (life force) আকারে,
মন ও আত্মার গভীর স্তরে ছুঁয়ে যায়,
যোগের মাধ্যমে এই শক্তির সাথে সংযোগ সম্ভব।
🧘♀️ পতঞ্জলি যোগসূত্র ও মনের সংযোগ
পতঞ্জলি যোগশাস্ত্র ৮টি স্তরে বিভক্ত, যাকে অষ্টাঙ্গ যোগ বলা হয়:
স্তরঅর্থউদ্দেশ্য১. ইয়মনৈতিক বিধানসমাজ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ২. নিয়মআত্মশুদ্ধিনিজেকে প্রস্তুত করা৩. আসনশারীরিক অবস্থানদেহ স্থিতি ও স্বাস্থ্য৪. প্রाणায়ামশ্বাসনিয়ন্ত্রণশক্তির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ৫. প্রত্যাহারইন্দ্রিয় সংযমবাহ্যিক আকর্ষণ থেকে মুক্তি৬. ধারণামনকে একাগ্র করাচেতনার গভীরে প্রবেশ৭. ধ্যানগহীন ধ্যানঅন্তরজগতে প্রবেশ৮. সমাধিআত্ম-পরমাত্ম সংযোগব্রহ্মাণ্ডীয় চেতনার সঙ্গে মিলন
👉 প্রাণায়াম, ধ্যান এবং সমাধি স্তরে গিয়ে মন ধীরে ধীরে ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তির সঙ্গে সংযুক্ত হয়।
🧠 মন ও চেতনার পরিবর্তন
যোগ অনুশীলনের মাধ্যমে:
মনের অস্থিরতা ও সংশয় দূর হয়
মন তাল মিলিয়ে চলে সর্বজনীন চেতনার সঙ্গে
চিন্তা, অনুভব, কর্ম – সব কিছু হয়ে ওঠে নির্বিকার ও জ্ঞাতস্বরূপ
পতঞ্জলি বলেন –
“তদা দ্রষ্টু স্বরূপে অবস্থিতঃ”
অর্থাৎ যখন মন স্থির হয়, তখন আত্মা নিজ স্বরূপে অবস্থিত হয়।
🔋 ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তি গ্রহণের উপায়
✅ ১. নিয়মিত ধ্যান
প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট নিঃশব্দে বসে ধ্যান করুন
নিজের শ্বাস, হৃদস্পন্দন বা শব্দে মন দিন
✅ ২. প্রাণায়াম অনুশীলন
অনুলোম-বিলোম, কপালভাতি
প্রাচীন প্রণালীতে শ্বাসনিয়ন্ত্রণে জীবনীশক্তি জাগে
✅ ৩. সত্যাচরণ ও নৈতিক জীবন
ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তি তখনই প্রবাহিত হয় যখন আমাদের জীবন সত্য, অহিংসা ও আত্মসংযমে ভরা থাকে
🌺 উপসংহার: ব্রহ্মাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে একীভূত করুন
পতঞ্জলির যোগশাস্ত্র শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি একটি আধ্যাত্মিক বিজ্ঞান, যা মানুষকে নিজের সঙ্গে, আর নিজের মাধ্যমে ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তির সঙ্গে যুক্ত করে। এই যোগমার্গে চললে আপনি কেবল শান্তিই নয়, বরং আত্মজ্ঞান ও অনন্ত চেতনার স্পর্শ পাবেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত প্রকাশ করুন