জীবন মানেই পরিবর্তন: মহাভারতের আলোকে মানসিক বিপ্লব ও জ্যোতিষের গোপন মানচিত্র

ছবি
  Dr prodyut Acharya  নিজস্ব ধর্মে দৃঢ় থাকা – জীবন ও জ্যোতিষ দর্শন প্রতিটি মানুষ একা, প্রত্যেকে তার নিজস্ব চিন্তাভাবনা, অভিজ্ঞতা ও মানসিকতার ফলাফল। এই বাস্তবতাটিই মানুষকে করে তোলে অনন্য। কেউ নিখাদ যুক্তিতে বিশ্বাসী, কেউ আবেগে, আবার কেউ কর্মফলে। যেমন মহাভারতের প্রতিটি চরিত্র —কৃষ্ণ, কর্ণ, ভীষ্ম, দ্রোণাচার্য, শকুনি, দুর্যোধন—সবাই নিজেদের স্বধর্মে অটুট ছিলেন, চূড়ান্ত পরিণতি যাই হোক না কেন। তাদের সিদ্ধান্ত কখনও ছিল আত্মত্যাগমূলক, কখনও ধ্বংসাত্মক—তবুও তারা নিজের বিশ্বাসচ্যুত হননি। গীতার তৃতীয় অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ বলেন— 👉 "শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিরতঃ, পরধর্মো ভয়াবহঃ" অর্থাৎ নিজের ধর্ম পালন করে মৃত্যুও শ্রেয়, অপরের ধর্ম পালন বিপজ্জনক। আমার জ্যোতিষ জীবনেও বহুবার দেখেছি—মানুষ নিজের অচলায়তন বিশ্বাস, অভ্যাস, প্রবৃত্তির শিকার হয়। সমস্যার মূল তাকে বোঝানো গেলেও সে নিজেকে পাল্টাতে চায় না। ❖ বাস্তব উদাহরণগুলো দেখলেই বোঝা যায় — একজন মানুষ তার সম্পর্কে অসহনীয় মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করছে, সম্পর্ক একতরফা, বারংবার অপমানিত হচ্ছে—তবু সে বলে, "আমি ভালোবাসি, সম্পর্ক রাখতেই হবে।" ...

জীবনের গোলকধাঁধায় ভাগ্যের সন্ধান

 
🔮 একাকী পুরুষ একটি পাহাড়ের কিনারায় দাঁড়িয়ে, আকাশে ছড়ানো গ্রহ-নক্ষত্র, হাতে গীতা ও জন্মছক, সামনে আলোকিত অনিশ্চিত পথ।
MyAstrology 

জীবনের বিভ্রান্তিতে ও ভাগ্যের অন্বেষণ

— জ্যোতিষ ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এক আত্মজিজ্ঞাসা
✍️ জ্যোতিষ ও হস্তরেখাবিদ্ প্রদ্যুৎ আচার্য

জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে, যখন চারপাশের সব কিছুই যেন নিজের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলে মনে হয়। সহানুভূতির স্পর্শ দুর্লভ হয়ে ওঠে, সহযোগিতার আশ্বাস ফিকে হয়ে যায়। আপন মানুষগুলোও কেমন যেন নিজের হাত গুটিয়ে নিয়ে এক এক করে দূরে সরে যায়। তখন পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, বিশ্বাস করার মতো কেউ খুঁজে পাওয়া যায় না।

এই সময়গুলো কি নিছকই কাকতালীয়, না কি এও গ্রহ-নক্ষত্রের গভীর প্রভাব?

দেখা যায়, কিছু মানুষ দীর্ঘদিন যাবৎ প্রচণ্ড চেষ্টা করেও কোনওভাবে সফল হতে পারছে না। আবার অন্য কেউ সামান্য প্রয়াসেই উল্লেখযোগ্য উন্নতি করে ফেলছে জীবনে। এমন অসম সমীকরণ কিসে নির্ধারিত হয়?

এগুলো কি শুধুই পরিশ্রমের তারতম্য, নাকি জ্যোতিষশাস্ত্রে বর্ণিত জন্মকালের গ্রহের অবস্থানেরই প্রভাব?


ব্যর্থতা মানেই পরাজয় নয়

আপনি যদি জীবনে প্রচুর প্রচেষ্টা করেও ব্যর্থ হন, তবে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই—যদি নিশ্চিত হন আপনি আপনার যোগ্যতা ও শক্তির শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন। সেই আত্মবিশ্বাসই হল আত্মমর্যাদার মূল।

আবার, আপনি যদি সফল হয়ে থাকেন, তবুও অহংকারের কোনও স্থান নেই। বরং কৃতজ্ঞ হওয়া উচিৎ সেই মহাশক্তির প্রতি, যিনি আপনাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছেন।

কারণ এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা আপনার থেকেও বেশি পরিশ্রম করেছেন, যাঁদের শিক্ষা, বুদ্ধি, প্রয়াস সব দিক থেকেই উন্নত ছিল, তবুও তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। এটাই প্রমাণ করে—

👉 মানুষ সফল হোক বা ব্যর্থ, তার জন্য সে একা কখনোই দায়ী নয়।


ভাগ্যের হাতছানি: জন্ম, পরিবেশ ও পরিবর্তন

একজন মানুষের জীবন কতটা দূর এগোবে তা নির্ভর করে সে কোথায় জন্মেছে, কোন পরিবেশে বড় হয়েছে, কতটা শিক্ষা পেয়েছে, কী ধরণের সামাজিক ও পারিবারিক সহায়তা পেয়েছে, এবং তার জীবনে কারা এসেছে—এই সব কিছু মিলে।

এই অনিয়ন্ত্রিত দিকগুলিকেই আমরা বলি ভাগ্য

এবং আমাদের মূল কাজই হল—এই ভাগ্যের সীমানাকে অতিক্রম করা। ভাগ্যের সাথে লড়াই করাটা খুবই কঠিন কাজ। কারণ এ এক অর্থে নিজের গড়ে ওঠা মানসিক গঠন, স্মৃতি, সীমাবদ্ধতা এবং ব্যর্থতার সাথে যুদ্ধ।


সমস্যার স্বরূপ: এক দাদুর গল্পে জীবনদর্শন

শৈশবে এক দাদুর মুখে শুনেছিলাম—“সমস্যারা পাঁচ ভাইবোন, একজন এলে বাকি চারজনও আসে, কিছুদিন থেকে আবার চলেও যায়।”
তখন মনে হতো এটা একটা মজার গল্প। কিন্তু বড় হয়ে দেখেছি—এই গল্পটাই জীবনের বাস্তব। এক সমস্যা কখনো একা আসে না।

তবুও আমাদের জীবনে তো বেঁচে থাকতে হবে, হাসতে হবে, ভালো থাকতে হবে। আর ভালো থাকার প্রধান শর্তই হলো—মনকে বোঝানো
এই বোঝাপড়াটাই হল আমাদের বেঁচে থাকার আসল বিজ্ঞান।


ভগবদ্গীতার আলো: কর্মে মনোনিবেশই মুক্তির পথ

এই প্রসঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ-এর কথাই মনে পড়ে:

“হে অর্জুন, তুমি কেবল যথাযথ কর্ম করো। ফলের দিকে মন দিও না।”
“কর্মণ্যেৱাধিকাৰস্তে মা ফলেষু কদাচন” (ভগবদ্গীতা ২.৪৭)

অর্থাৎ তুমি যা করছো, সেই কর্মেই মনোনিবেশ করো। ফল কী হবে, সে চিন্তা ছেড়ে দাও। কারণ ফল আমাদের হাতে নেই, কিন্তু চেষ্টা—তা পুরোপুরি আমাদের হাতে।

আমরাও যদি আমাদের সবটুকু সামর্থ্য, প্রতিভা ও মন দিয়ে কর্ম করতে পারি, তাহলে সফলতা সম্ভব। আর যদি ব্যর্থও হই, তবু অন্তর থেকে বলতে পারি—“আমি আমার ১০০% দিয়েছি।” সেই আত্মতৃপ্তিই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়।


সিসিফসের চূড়ান্ত পাঠ: অর্থহীনতার মধ্যেই অর্থ

এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে সিসিফসের কাহিনি
গ্রিক পুরাণের সেই চরিত্র, যিনি দেবতাদের অভিশাপে অনন্তকাল ধরে একটি বিশাল পাথর গড়িয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন—পাথরটি আবার গড়িয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছে।
এই অসার ও ব্যর্থ চেষ্টাই তার চিরন্তন কাজ।

আলবেয়ার কামু তাঁর প্রবন্ধ “The Myth of Sisyphus”-এ লেখেন:

“One must imagine Sisyphus happy.”
অর্থাৎ, জীবন যদি অর্থহীনও হয়, আমরা যদি সেই অর্থহীনতাকেই মন থেকে গ্রহণ করি, তাহলে তার মধ্যেই আমরা সুখ খুঁজে পেতে পারি।

এই বোকা মনে হতে পারে, কিন্তু আমার কাছে আর কোনও বিকল্প নেই। তাই আমি আমার জীবনের বর্তমানকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করেছি।
যেটুকু আমার হাতের মধ্যে আছে, সেটুকুই পূর্ণ মনোযোগে করতে চেষ্টা করি। এখন আর ব্যর্থতার ভয় পাই না।


J. Krishnamurti-র সত্য উপলব্ধি

জিডু কৃষ্ণমূর্তি বলেছিলেন:

“Truth is a pathless land.”
আমরা যেখানেই থাকি না কেন, জীবন কেবল বর্তমান মুহূর্তেই ঘটে। অতীত স্মৃতি কিংবা ভবিষ্যতের কল্পনা—দুটোই বাস্তবের বাইরে।

এই মুহূর্তই সত্য। এই মুহূর্তেই কাজ সম্ভব। অতীত বা ভবিষ্যৎ নয়।


ঈশ্বরের পরিকল্পনা ও ভাগ্যের বিন্যাস

আমি বিশ্বাস করি, ঈশ্বর আমাকে সৃষ্টি করার আগে আমার জীবনে যা যা লাগবে—তা ভাগ করে দিয়েছেন: জ্ঞান, সাহস, প্রতিভা, বুদ্ধি, সহনশীলতা।
তাই আমি ভবিষ্যতের ফল নিয়ে চিন্তা করি না। আমি শুধু এখন এই মুহূর্তে যা কিছু করা সম্ভব, তাই করি সম্পূর্ণ মন দিয়ে।


Kant-এর বিশ্বাস ও যুক্তির দ্বৈততা

এখানে ইমানুয়েল কান্ট-এর কথা মনে পড়ে। তিনি বলেন:

“Though we cannot know God or soul through pure reason, we must believe in them for moral and practical life.”

বস্তুত, যুক্তি ও বিজ্ঞান দিয়ে অনেক কিছু বোঝা যায়, কিন্তু তার সীমা আছে।
যখন সেই সীমার বাইরে প্রশ্ন উঠে আসে—তখনই আমাদের প্রয়োজন হয় আস্থা, বিশ্বাস, ধর্ম ও দর্শনের

এই বিশ্বাসগুলোকে না ভেঙে বরং বোঝা উচিত—যা যুক্তি ও বিজ্ঞান দিয়ে চলে, তা এক জগৎ। আর যা মান্যতা দিয়ে চলে, তা আরেক জগৎ।
দুটোই সত্য, যদি আমরা বোঝার দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারি।


উপসংহার: আলো খোঁজার চেষ্টায় থাকুন

জীবন কখনোই একরৈখিক নয়।
তবে জীবন মানেই চেষ্টা—নিজের সঙ্গে, ভাগ্যের সঙ্গে, অস্তিত্বের সঙ্গে।
আলো না থাকলেও, আলো খোঁজার চেষ্টাটা চালিয়ে যেতে হবে।

“অন্ধকার যত গভীর হয়, প্রভাত তত কাছাকাছি।”

ধন্যবাদ 🙏

MyAstrology – Ranaghat
Astrologer and Palmist Dr. Pradyut Acharya
📞 +91 93331 22768
🌐
🔗 Facebook | Instagram | YouTube

মন্তব্যসমূহ

Astrologer Dr Prodyut Acharya, MA. M Phil. PhD. in asrtology gold medalist,

Astrologer Dr Prodyut Acharya, MA. M Phil. PhD. in asrtology gold medalist,
Online Astrology service and Palm reading, best Astrologer and palmist in india

অন্যান্য পোস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন

আরও দেখান

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রধানমন্ত্রীর ডাকে প্রদীপ, মোমবাতি, জ্বালানোর সাথে উচ্চারণ করুন, সনাতনের আদি শব্দ "ওঁম"

ভাদ্র মাসে জন্ম হলে মানুষ কেমন হয়

শিব পুজো করার আগে জেনে নিন শিবলিঙ্গ কি?

পৃষ্ঠাসমূহ