ধনতেরাস কি?

-

ধনতেরাস 

ধনতেরাস কথার মানে হলো ধনত্রয়দশি বা ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী| কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়| আমরা সকলেই জানি যে দীপাবলীর অর্থাৎ কালীপুজোর দুদিন আগে এই উৎসব পালন করা হয়, আর ওই দিনে কেনা হয় বহু মূল্যবান রত্ন ও সোনা রুপো এবং বিভিন্ন ধাতু বাসনাদি|

কিন্তু কেন কেন? এই দিনে কেনা হয় বহুমূল্য রত্ন এবং সোনারূপো সহ বিভিন্ন ধাতু বাসনাদি?

আসুন জেনে নি এই ধনতেরাস সম্পর্কে |
পুরনো মান্যতা অনুসারে এই দিনে ভগবান ধন্বন্তরি আবির্ভূত হন| ভগবান ধন্বন্তরি চিকিৎসার দেবতা ছিলেন| ভগবান ধন্বন্তরি আবির্ভূত হওয়ার সময় তার হাতে ছিল অমৃতের ভান্ড অর্থাৎ অমৃতের কলস| যেহেতু ভগবান ধন্বন্তরি কলস নিয়ে আবির্ভূত হন, তাই এই দিনে বাসন সহ বিভিন্ন রত্ন, সোনা রুপো এবং ধাতব দ্রব্য কেনার প্রথা প্রচলিত হয়|


এছাড়াও হিন্দু শাস্ত্র মতে ধনতেরাস নিয়ে অনেক কাহিনী আছে জেনে নেব তার মধ্যে আরও একটি |

একসময় দুর্বাসা মুনির অভিশাপে স্বর্গরাজ্যে দেবতারা লক্ষ্মী হীন হয়ে পড়ে| প্রজাপতি ব্রহ্মার নির্দেশে দেবতা ও রাক্ষসের সংঘবদ্ধভাবে সমুদ্রমন্থনের পর, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে দেবতারা লক্ষ্মী দেবীকে ফিরে পান| তাই হারিয়ে যাওয়া ধন সম্পদ বা লক্ষ্মী দেবীকে ফিরেপাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে এই ধনতেরাসের উপাসনা| লক্ষ্মীর আরাধনার মাধ্যমে সূচনা হয় দীপাবলি বা কালীপুজো মা জগৎজননী আরাধনা |

এই ধনতেরাস নিয়ে আরও একটি কাহিনী হলো|
একদা রাজা হিমের  পুত্রের মৃত্যু তার বিয়ের চতুর্থ দিনে| নববধূ প্রচুর পরিমাণে মহা মূল্যবান রত্ন সোনা রুপা এবং বিভিন্ন ধাতু সামগ্রী বাসনপত্র এবং প্রদীপ দিয়ে ঘর দরজা সাজিয়ে রাখেন| প্রদীপের আলোয় চকচকে ধাতুর উজ্জলতায় চোখ ধাঁধিয়ে যায় যমরাজের যমরাজ প্রসন্ন হয়ে অন্য পথ অনুসরণ করেন| তখন যমের হাত থেকে বেঁচে যান হিমের পুত্র এরপর থেকেই ধনতেরাসের দিনে শুরু হয় মহা মূল্যবান রত্ন সহ মূল্যবান ধাতু সোনারূপো বিভিন্ন বাসনাদি কেনার রীতিনীতি, এবং যমরাজ কে প্রদীপ জ্বালিয়ে তার আরাধনা করলে মনে করা হয় পারিবারিক কোন সদস্যর অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকলে কমে যায় |

ধনতেরাসের এই শুভ লগ্নে ধনী-গরীব নির্বিশেষে প্রতিটি গৃহস্তে কোন না কোন ধাতু ক্রয় করা,
 মা লক্ষ্মীর আরাধনা করে গৃহস্থের অভাব দূর করার কামনা কামনা করা,
এবং যমরাজের উদ্দেশ্যে প্রদীপ জ্বালিয়ে পরিবারের সকল সদস্যের দীর্ঘায়ু কামনা করা হয় |
(ধনতেরাসের দিনে এ্যালমুনিয়াম সিসা প্লাস্টিক ইত্যাদি কেনা উচিত নয়) 
Astrolger Dr. Prodyut Acharya 
Contact +91 9333122768 

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভাদ্র মাসে জন্ম হলে মানুষ কেমন হয়

-
ছবি
ভাদ্র মাসে জন্ম হলে মানুষ কেমন প্রকৃতির হয়  সিংহ রাশি  সিংহ রাশি রাশিচক্রের পঞ্চম রাশি, সিংহ রাশিতে যখন রবি প্রবেশ করে তখন ভাদ্র মাসে শুরু হয়| মানুষের জন্ম সময় রবির অবস্থান অনুযায়ী মানুষের প্রকৃতি ও ভাগ্যের সম্পর্কে কিছুটা স্থূল ধারণা পাওয়া যায় | ভাদ্র মাসে যেসব জাতক-জাতিকাদের জন্ম, তারা খুব সাহসী দৃঢ় প্রকৃতির, এরা চায় সবার থেকে আগে এবং সবার উপরে থাকতে, সেই জন্যই এরা যে কাজে হাত দেয় তা সম্পন্ন করতে জীবন-মরণ চেষ্টা করে থাকে| সমস্ত বড় ব্যাপারের দিকে এদের নজর থাকে, বড় আদর্শ সামনে রেখে এরা সেই ভাবে চলতে চেষ্টা করে, কিন্তু এরা আশা ও আদর্শ উচ্চ হওয়ায় মাঝে মাঝে তা কার্যক্ষেত্রে ফলদায়ক বা কার্যকরী হয় না| এরা একটু সরল প্রকৃতির অর্থাৎ খোলাখুলি ব্যবহার ও কথাবার্তা বলতে বেশি পছন্দ করে, মিথ্যা, ছল, প্রতারণা, এসব ব্যাপার কে অত্যন্ত ঘৃণা করে| এরা নিজেরা সৎ থাকার কারণে অন্যদের তেমন মনে করে এবং অন্যদের খুব তাড়াতাড়ি বিশ্বাস করে ফেলে| কিন্তু বাস্তব জগতে মানুষ যখন চালাকি, প্রতারণার, পরিচয় পায় তখন এদের মন তিক্ত হয়ে যায়, এবং এরা কঠোর হৃদয়ের মানুষ হয়ে ওঠে| জাতকের...
আরও পড়ুন

শ্রাবণ মাসে জন্ম হলে মানুষ কেমন হয়

-
ছবি
শ্রাবণ মাসে জন্ম হলে মানুষ কেমন প্রকৃতির হয়  কর্কট রাশি  কর্কট রাশি, রাশিচক্রের চতুর্থ রাশি, কর্কট রাশিতে যখন রবি প্রবেশ করে তখন শ্রাবণ মাসে শুরু হয়|  জন্ম সময় রবির অবস্থান অনুযায়ী জাতকের স্বভাব প্রকৃতি ও ভাগ্যের সম্পর্কে কিছুটা স্থূল ধারণা পাওয়া যায় | শ্রাবণ মাসে যেসব জাতক-জাতিকাদের জন্ম এরা খুব বেশি পরিমাণে ভাবপ্রবণ আবেগপ্রবণ ও অভিমানি প্রকৃতির হয়ে থাকে, এদের মধ্যে প্রেম প্রীতি ভালোবাসা স্নেহ মায়া-মমতা বেশি দেখা যায়, এরা সমাজের কল্যাণকর কাজে নিজেকে নিয়োগ করে, দাতা ও শান্তিপ্রিয় প্রকৃতির হয়ে থাকে|  এদের মধ্যে কিছু অদ্ভুত জিনিস দেখতে পাওয়া যায় যা অন্যদের মধ্যে খুব বেশি দেখা যায় না, যেমন প্রাচীন জিনিসের উপরে প্রচন্ড আকৃষ্ট থাকে প্রাচীন শাস্ত্র, ইতিহাস, পুরান, প্রাচীন নির্মাণ ইত্যাদির প্রতি এদের আকর্ষণ থাকে| এরা সংসারী এবং গৃহসুখ প্রিয় প্রকৃতির, তবুও এদের ভ্রমণের খুব নেশা থাকে| এরা পরিশ্রমী কিন্তু কারো আদেশ অনুযায়ী কাজ করার থেকে ভালোবাসার বিনিময়ে পরিশ্রম করতে বেশি পছন্দ করে | এরা অন্যের থেকে সহানুভূতি, ভালোবাসা, প্রশংসা, বাহবা পাওয়ার জন...
আরও পড়ুন

হাতের আয়ু রেখা বিচার

-
ছবি
Life line হাতের যে রেখাটি বৃহস্পতির ক্ষেত্রের নিচের থেকে শুরু করে, শুক্রের ক্ষেত্রকে ঘিরে ধনুকের মত বাকিয়ে, মনিবন্ধ রেখার দিকে চলে আসে, এই রেখা টি কে বলে আয়ু রেখা | আয়ু রেখা টি যদি বৃহস্পতির ক্ষেত্রে নিচের থেকে শুরু না হয়ে, বৃহস্পতির ক্ষেত্র থেকেই শুরু হয় | তাহলে এই ধরনের জাতক-জাতিকা স্বাধীনচেতা মানসিকতার হয়, এদের উচ্চ আকাঙ্ক্ষা প্রচন্ড পরিমাণে থাকে | এর ফলে এদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ছোটবেলা থেকেই দেখা যায় | কিন্তু যদি এই আয়ুরেখাতে দীপ চিহ্ন দেখা যায়, তাহলে এটি নির্দেশ করে এই জাতক-জাতিকা বাল্যকালে খুব একটা শক্ত সামর্থ্য হবে না, কারণ সে নিজের ক্ষমতাকে অত্যাধিক ব্যবহার করেছে | আবার ধরুন আয়ুরেখা বৃহস্পতির ক্ষেত্রে নিচ থেকেই শুরু হয়েছে, সেই রেখা থেকে একটি রেখা বৃহস্পতির ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে, এই রেখাটি যে বয়সে সৃষ্টি হবে অর্থাৎ যখন এই রেখাটি হাতে দেখা যাবে, ওই বয়সে জাতক বা জাতিকার উচ্চ আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি হবে, এবং উচ্চ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবার জন্য অত্যাধিক পরিশ্রম করবার দিকে ঝোঁক থাকবে | আবার এইসব রেখাতে ও যদি দ্বীপ চিহ্ন দেখা যায়, তাহলে জাতক নিজের ক্ষমতার তুলনায় অত্যাধি...
আরও পড়ুন