|
বাস্তু শাস্ত্র |
বর্তমানে বিজ্ঞানের প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে, মানুষের সমস্ত কাজ সহজ সরল হয়ে উঠেছে | এখন মানুষ শুধুমাত্র আঙুলের ছোঁয়ার মাধ্যমে সমস্ত কাজ সেরে ফেলতে পারে | আজ আমরা টেকনোলজী ছাড়া এক মুহূর্ত চলতে পারি না, আর চলাটাও সম্ভব না | মানুষ আজ প্রযুক্তির গোলাম হয়ে গেছে | মানুষের উন্নতির সাথে সাথে চারিদিকে বেড়ে উঠছে নিত্যনতুন যানবাহন, কল কারখানা, ইত্যাদি ইত্যাদি | এর জন্য সৃষ্টি হচ্ছে শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, এক কথায় বলতে গেলে পরিবেশ দূষণ | এর ফলে বাড়ছে মানুষের মানসিক চাপ, সহ নানা রকম রোগ ব্যাধি | এই সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে আমাদের এই সবুজ প্রকৃতি, অর্থাৎ গাছপালা |
গাছপালা পরিবেশ থেকে দূষিত রাসায়নিক যুক্ত আবহাওয়া শুষে নিতে পারে, কিন্তু প্রকৃতি প্রতিদিন আমাদের দ্বারা একটু একটু করে ধ্বংস হচ্ছে, উন্নতির নামে কেটে ফেলা হচ্ছে হাজার হাজার গাছপালা, তাই পরিবেশ দূষণ ও বেড়ে চলেছে | ফলে প্রাণীজগৎ প্রাণ সংকটের মুখে এগিয়ে যাচ্ছে | প্রকৃতিকে রক্ষাকরে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে এর দায়িত্ব আপনার আমার সকলের নিতে হবে | এসবতো গেল বাইরের কথা, সমস্যা যখন বাইরে তার দায়িত্ব থেকে আপনি এড়িয়ে গেলেও সমস্যা যখন আপনার ঘরে, এর দায়িত্ব শুধু আপনাকেই নিতে হবে | অর্থাৎ বাইরের পরিবেশ দূষণের সাথে সাথে আজ আপনার ঘর ও দূষণমুক্ত নেই | জ্যোতিষ শাস্ত্র ও বাস্তু শাস্ত্র এবং বিজ্ঞানের সূত্র অনুযায়ী, জগতের প্রতিটি বস্তু থেকেই কিছু না কিছু প্রভাব নির্গত হয় কিছু বস্তু থেকে positive energy অর্থাৎ ধনাত্মক শক্তি কিছু বস্তু থেকে negative energy অর্থাৎ ঋণাত্মক শক্তি বিকিরণ করে | যেমন স্টিল, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ইত্যাদি জিনিস থেকে নেগেটিভ এনার্জি বিকিরণ হয় | ঘরের রং, সেলফোন, টিভি, কম্পিউটার, প্রিন্টার, ফ্রিজ, ওয়াশিং, মেশিন, এবং ঘরে ব্যবহার করা ও ঘর সাজানোর অনেক আধুনিক জিনিসপত্র, যে সব জিনিসপত্র থেকে অত্যন্ত পরিমাণে রাসায়নিক গ্যাস এবং ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন বিকিরণ হয়, যা মানুষের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক | যেই কারণে মানুষের জটিল ও কঠিন রোগ-ব্যাধি বেড়ে চলছে |
অন্যান্য -
মেয়েদের এই অঙ্গ গুলো বড়ো থাকলে মেয়েরা হয় সৌভাগ্যবতী
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র ও বাস্তুশাস্ত্র মতে বাড়ির পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার জন্য, প্রাচীন মুনিঋষি গন বাড়িতে অনেক ধরনের গাছ লাগাবার কথা উল্লেখ করে গেছে | বর্তমানে বাস্তুশাস্ত্রবিদ্ ও scientist ঘরের এই সমস্ত দূষিত আবহাওয়া দূষণমুক্ত করতে ঘরে নানা ধরনের গাছের টব লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন | নাসার বিজ্ঞানীরাও এর সমর্থন করেছেন,
NASA Clean Air Study | এবার দেখে নেওয়া যাক কি ধরনের গাছের টপ ব্যবহার করে আপনার ঘর ও অফিস সাজানো সহ, দূষিত রাসায়নিক আবহাওয়ার থেকে মুক্তি পেতে পারেন, এবং বিভিন্ন জটিল ও কঠিন শারীরিক রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হবার থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেন |
ঘরের ফ্রিজ অথবা অন্যান্য মেসিন পত্র থেকে
CFC gas নির্গত হয় এবং বাড়ির বা অফিসের প্রিন্টার ও ফটোকপি থেকে যে
ozone gas নির্গত হয় তা মানুষের বুকে ব্যথা ও গলার খুসখুসে কাশির সৃষ্টি করে । গবেষকদের মতে, ঘরে এবং অফিস রুমে মানি প্ল্যান্ট রাখলে বিষাক্ত সিএফসি এবং ওজোন গ্যাস শোষণ করে ঘরের আবহাওয়া স্বাস্থ্য কর করে তোলে ।
দরজা জানালা খোলা অবস্থায় যদি আশেপাশের ক্ষতিকারক দূষিত বাতাস ঘরে ঢুকে পড়ে, তাহলে এই গাছ সেই দূষিত বাতাস শোধন করতে সাহায্য করে।
অন্যান্য -
এই কয়েকটি জিনিস ঘরে রাখুন, জীবনে কোনদিন টাকা-পয়সার অভাব হবেনা
International Journal of neuroscience এর গবেষকরা জানিয়েছেন পুদিনা গাছ মস্তিষ্ককে সচল রাখতে এবং মানুষের স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, এবং সাথে খিদে নিয়ন্ত্রণ ও ওজন নিয়ন্ত্রণেও লাভ দায়ক |
কম্পিউটার বা অন্যান্য মেশিনপত্র খুব বেশী ব্যবহার করার ফলে অনেকের মাথা ব্যথা শুরু হয়। এর কারণ হচ্ছে কম্পিউটার বা অন্যান্য মেশিন থেকে কিছু উদ্বায়ী কেমিক্যাল বাতাসে মেশে, এই গ্যাস নিঃশ্বাসের সাথে মস্তিষ্কে চলে যায় এবং মাথাব্যথার কারন হয় । University of Georgia একটি গবেষণায় থেকে জানা যায় ইংলিশ আইভি নামক এই গাছ বাতাসের ক্ষতিকর কেমিক্যাল শুষে নিতে পারে ।
গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে দুষিত বায়ু পরিশোধনের সেরা গাছগুলোর মধ্যে অন্যতম, অ্যালোভেরা। এই গাছ সারারাত ধরে অক্সিজেন সরবরাহ করে, তাই শোবার ঘরের জন্য এই গাছ আদর্শ। এই গাছ যা ডিটারজেন্ট এবং প্লাস্টিক থেকে ছড়ানো বেনজেন এবং বার্নিশ ও ফ্লোর ফিনিশিং থেকে ছড়ানো ফর্মালডিহাইড এর বিরুদ্ধে লড়াই করে, ফলে ঘরের বাতাস হয়ে ওঠে বিশুদ্ধ।
ঘরে পেইন্টিংয়ের কাজ করলে বা নেইল পলিশ জাতীয় কিছু ব্যবহার করেন তবে ফার্ন গাছ অবশ্যই ঘরের ভিতরে রাখতে পারেন পারেন। এটি
Xylene and Toluene মতো বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে কাজ করে।
মানসিক চাপ কমাতে এই লেমন বাম নামক গাছ আমাদের সাহায্য করে ।
OHIO university এর গবেষণা অনুযায়ী, এই গাছ একপ্রকার সুগন্ধ রয়েছে যা মস্তিষ্কে
endorphin নামক হরমোনের নিঃসরণ ঘটায়। এই হরমোনের দ্বারা মানুষ আনন্দ উপভোগ করে, এবং মানসিক চাপ বা বিষন্নতা কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
বহু গুণ সম্পন্ন তুলসী গাছের ফুল, পাতা, কান্ড ও মূল দিয়ে প্রাচীন কাল থেকেই আয়ুর্বেদ ও ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। তুলসী গাছ ঘরের বাতাসের বিষাক্ত পদার্থ শোষণ করে, দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টাই অক্সিজেন সরবরাহ করে |
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী তুলসী গাছ রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মানা হয়েছে |
তাহলে আমরা এই গাছ গুলো ব্যবহার করে ঘর দূষণ মুক্ত করার সাথে সাথে ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে পারি | আর বাইরের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা প্রত্যেকে কয়েকটি করে গাছ লাগাই |
একটি গাছ একটি প্রাণ গাছ লাগান প্রাণ বাচান |
অন্যান্য -
সামুদ্রিক শাস্ত্র অনুযায়ী হাতের উল্টো পিঠে লুকিয়ে মানুষের ভাগ্য
আজকের লেখা এই পর্যন্তই লেখা ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদের জানাবেন | এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে, প্রচুর পরিমাণে শেয়ার করে, অন্যদের গাছ লাগানোর অনুপ্রাণিত করে , নিজকে এই মহান কাজের অংশে নিয়োজিত করবেন | নমস্কার
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত প্রকাশ করুন