হাতের যেই চিহ্ন জীবন বদলাতে পারে
বিভিন্ন মানুষের হাত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে এই বিভিন্ন ধরনের হাতে বিভিন্ন রকম চিহ্ন দেখা যায়| হাতের গঠনমূলক বৈশিষ্ট্যে ও রেখার সঙ্গে নানা রকম চিহ্ন হাতে দেখা যায় । এইসব চিহ্ন গুলো বিভিন্ন স্থানে থাকার কারণে বিভিন্ন রকম ফল পাওয়া যায়। তবে এই চিহ্ন গুলোর মধ্যে কোনাে কোনাে চিহ্নের সু-ফল দেওয়ার ক্ষমতা বেশি থাকে । আবার কোনাে কোনাে চিহ্নের কু-ফল দেওয়ার ক্ষমতা বা বেশি । হাতের প্রধান রেখা ও শাখা রেখা ছাড়াও ভারতীয় শাস্ত্র মতে আবার কিছু বিশেষ চিহ্ন বা দুর্লভ চিহ্ন আছে|
যেমন:- ঘট, নিশান(পতাকা), অশ্ব্(ঘােড়া) , হাতি , মৎস্য প্রভৃতি আরও নানা রকম চিহ্ন। এইসব চিহ্ন গুলো থেকে ফল বিচার করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। এর কারণ হল কোনটা আসলে চিহ্ন আর কোনটা শাখারেখার সমষ্টি, এবং কোনটা অন্য রেখার ফল দেবে এগুলো ভালো করে খেয়াল করে দেখতে হবে। তাই এই বিষয়ে ধারণা পেতে হলে প্রতিটি রেখা ভালো করে খুটিয়ে দেখে বিচার করতে হবে।
এখন সাধারণ চিহ্ন গুলো নিয়ে আলোচনা করছি। এই চিহ্ন গুলো কি কি হতে পারে, তা একবার দেখে নেওয়া যাক । সাধারণ চিহ্ন গুলো যেমন :-
১ ) তারকা চিহ্ন বা Star Sign,
২ ) চতুষ্কোণ চিহ্ন বা Square Sign,
৩ ) যব বা দ্বীপ চিহ্ন island Sign,
৪ ) বৃত্ত চিহ্ন বা Circle Sign,
৫ ) ত্রিভুজ চিহ্ন বা Traingle Sign,
৬ ) ক্রশ চিহ্ন Cross Sign,
৭ ) জাল চিহ্ন বা Networi,
৮ ) কালাে তিল বা Spot Sign,
এখন চিহ্ন গুলো কোনটি কেমন ফল দেবে তা বিচার করে জানতে হলে প্রতিটি চিহ্নকে ভালােভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে অবস্থান অনুযায়ী ফল কল্পনা করতে হবে।
নক্ষত্র চিহ্ন ও তার বিচার:-
start sing বা নক্ষত্র চিহ্ন নানা হাতে নানা রকমের হতে পারে । এদের আকারের প্রকৃতি নানা ধরনের হয়ে থাকে। অবস্থান অনুযায়ী তারা চিহ্নের ফল কখনও শুভ , কখনও অশুভ হয়ে থাকে। কোন স্থানে এইতারা চিহ্ন কেমন ফল দান করে। প্রকৃত তারা চিহ্ন কেমন হয় , তা ভালাে করে দেখে নেওয়া অবশ্যক।
বিভিন্ন স্থানে তারা চিহ্নের ফলাফল।
১ ) হাতে চন্দ্রের ক্ষেত্রে যদি এই তারা চিহ্ন থাকলে সেই জাতক বা জাতিকা হয় খুব কল্পনাপ্রবণ । চন্দ্রের ক্ষেত্র যদি শুভ ও উচ্চ থাকে কল্পনাশক্তি উন্নত ধরনের ও উচ্চ পদ-মর্যাদা লাভ ইঙ্গিত করে এবং অর্থাগাম হয়ে থাকে । নতুন কিছু আবিষ্কার করে জগৎকে হঠাৎ চমকে পারে।
কিন্তু চন্দ্র যদি অশুভ ও নীচস্থ হয় , তাহলে জাতক-জাতিকার কল্পনাশক্তি থাকে ঠিকই, কিন্তু সে কল্পনা উন্নত নয়, ফলে তাদের মানসিক ও রােগে কষ্ট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২) শুক্রের ক্ষেত্রে তারকা চিহ্ন থাকলে , সেই জাতক-জাতিকাদের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি খুব বেশি যৌন আকর্ষণ থাকে। তাদের মধ্যে আকর্ষণ শক্তিও বেশি থাকে। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বেশি আকর্ষণ ও কল্পনা প্রবন হওয়ার কারণে বিপরীত লিঙ্গের মানুষ দ্বারা প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই চিহ্ন খুব ভালো বলা যায় না । তবে এরা একটু ভােগী ধরনের হয়, ভালাে মন্দ খাবার খাওয়া, ভালাে মানের বেশভূষা এরা ব্যবহার করতে চায় এবং নানা ভােগের সামগ্রী ভোগ করে থাকে। এটা এদের সৌভাগ্যও বলা যায় ।
৩ ) বৃহস্পতির ক্ষেত্রে তারকা চিহ্ন থাকে তাহলে জাতক খুব ধার্মিক হয়, কিন্তু খ্যাতি নামের সঙ্গে আবার তার গর্ব বা অহংঙ্কারের ভাব প্রকাশ পায়, এই কারণে অনেক সময় তাদের ক্ষতিও হতে পারে। যদি এদের সৎ গুণ বেশি হয় তাহলে ভালাে , রজ গুন বৃদ্ধি পেলে তা অত্যন্ত খারাপ হয়ে ওঠে। এরা সুপথে অর্থ ও যশ পেয়ে থাকে এবং বিবাহ ক্ষেত্রেও শুভ হয়।
৪) রবির ক্ষেত্রে যদি তারকা চিহ্ন থাকলে, সেই জাতক কাব্য, শিল্প, সাহিত্য, গান-বাজনা,ও অভিনয় বা অন্য কোনাে কিছুর চর্চা করার উৎসাহী হয় এবং তার ফলে জীবনে খ্যাতিমান অর্জন করতে পারে। প্রচুর অর্থ সম্পদ খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকে।তাই এরা খুব অহঙ্কারী হয় । তাদের অহংকারে আঘাত দিলে, এরা ত্যাগ করতেও পিছপা হয় না| তাতে অবশ্য এই রেখার সঙ্গে, অন্যান্য শুভ অশুভ রেখা গুলোও বিচার করতে হবে, তবেই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে |
৫) বুধের ক্ষেত্রে তারকা চিহ্ন থাকলে শুভাশুভ মিশ্রিত ফল পাওয়া যায়।যেমন জাতক খুব জ্ঞানী হয় , আবার অন্যদিকে তার মধ্যে চাঞ্চলতা কপটতা প্রভৃতি বদ গুণও এদের মধ্যে থাকে। তাই এদের মধ্যে দুই ধরনের ভাবই দেখা যায়। এরা যে কোনাে কাজ নিজের বুদ্ধি এবং উদ্ভাবনী শক্তির দ্বারা করতে পারে এবং তার থেকে সুনাম ও অর্থ উপার্জন করতে পারে।
৬) রাহুর ক্ষেত্রে তারকা চিহ্ন থাকলে জাতক পুলিশ, মিলিটারি গােয়েন্দা , সেনাবাহিনী প্রভৃতি ক্ষেত্রে উচ্চ পদ লাভ করতে পারে। সর্বাধিনায়ক পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। আবার জাতকের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এই ধরনের কর্মের কারণে। তবে এরাই হয় প্রকৃত বীর এবং যােদ্ধা।
৭) বুধের ক্ষেত্রে তারকা চিহ্ন থাকলে জাতকের বুদ্ধি স্মতিশক্তি প্রখর হয়। তিনি ব্যবসা, বাণিজ্যে ও বিজ্ঞান ক্ষেত্রে প্রচুর উন্নতি লাভ করতে পারে। এছাড়া ভালাে বক্তা হয় । তবে তার চঞ্চল মানসিকতা হয় তাই অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নির্ণয় পারে না। এদের মধ্যেও সব সময় বালক সুলভ স্বভাব কপটতা প্রভৃতি থাকে।
৮) মঙ্গলের ক্ষেত্রে তারকা চিহ্ন থাকলে জাতক চরিত্রবান, সাহসী, দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ভূ-সম্পত্তির অধিকারী পরিশ্রম করে উন্নতি লাভ করতে পারে।
৯) শনির ক্ষেত্রে তারকা চিহ্ন থাকলে জাতক জাতিকা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়| যােগ, সাধনা, তন্ত্র-মন্ত্র, গুপ্তবিদ্যা , ম্যাজিক প্রভৃতির দিকে ঝোক থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার ভাগ্য খুব ভালাে বলা যায় না।কারণ এরা জীবনে বেশি ভোগ-সুখ করতে পারেনা| এছাড়া এদের বুকের রােগ, হার্টের রােগ, ব্রেনের রােগ, পক্ষাঘাত, বাত রোগ এবং হঠাৎ- দুর্ঘটনা, সর্পাঘাত প্রভৃতির সম্ভাবনা থাকে। এরা যদি যোগী অথবা সন্ন্যাসীর মত জীবন যাপন করে তাহলে অশুভ শক্তি এদের স্পর্শ করতে পারে না।
১০) আয়ুরেখার উপর তারকা চিহ্ন থাকলে ঐ চিহ্ন নির্দিষ্ট বয়সে জাতক-জাতিকার ভাগ্য উন্নতি হয়।
১১) ভাগ্যরেখার উপর তারকা চিহ্ন ঐ বয়সে, ভাগ্যের প্রচুর উন্নতি নির্দেশ করে।
১২) হৃদয়রেখার উপর চিহ্ন হৃদয়বান মানুষের পরিচয় দেয়। তবে এরা প্রেমের দিকে উদারতা দেখাতে গিয়ে এরা প্রতারিত হতে পারে।
১৩) শিরোরেখার উপর তারকা চিহ্ন থাকলে জাতকের মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং উন্নত চিন্তাধারা সৃষ্টি হয়|
Astrolger Dr. Pradyut Acharya
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত প্রকাশ করুন